সর্বশেষ সংবাদ: জাতীয় শিক্ষাক্রম অনুসরণ করছে ইবতেদায়ী মাদ্রাসা: শিক্ষামন্ত্রী রূপগঞ্জে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় যুবককে কুপিয়ে জখম করেছে কিশোর গ্যাং সদস্যরা সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মুরাদ কানাডা-আমিরাতে ঢুকতে না পেরে ফিরে আসছেন ঢাকায় বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে ——- তারা‌বো পৌরসভার মেয়র হা‌সিনা গাজী সোনারগাওঁয়ের সাদিপুর ইউ,পিতে ৩ নং ওয়ার্ডের মেম্বার নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল এলাকায় র‌্যাব-১১ এর অভিযানে ০৪ পরিবহন চাঁদাবাজ গ্রেফতার রূপগঞ্জে পুলিশ পরিদর্শকসহ ব্যবসায়ীকে হানজালা বাহিনীর হুমকি, ইটপাটকেল নিক্ষেপে দুই পুলিশ সদস্য আহত রূপগঞ্জে মন্ত্রীর পক্ষে ছাত্রলীগ নেতারদের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হলেন আহমদে জামাল ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই দেশে ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু

সকল শিরোনাম

“এপেক্স ইন্টারন্যাশনাল জার্নালিস্ট কাউন্সিল” এর বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের কমিটি গঠন ভুলে ভরা এনআইডি ইসরায়েলে মুহুর্মুহু রকেট নিক্ষেপ হিজবুল্লাহর ৪৩ পণ্য রপ্তানিতে মিলবে প্রণোদনা যেকারণে পুরুষদের শুক্রাণুর মান কমে যাচ্ছে ইফতারে পুদিনা পাতা খেলে পাবেন ৮ উপকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল হতে পারে ঢাকার কড়াইল বস্তিতে আগুন বিএনপি নেতারা কেন স্ত্রীদের ভারতীয় শাড়ি পোড়াচ্ছেন না, প্রশ্ন প্রধানমন্ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বনাম বইপড়া বাংলা নববর্ষ উদযাপনে অপপ্রচার চালালেই ব্যবস্থা : স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শাহরুখ কন্যার গোসলের ভিডিও ভাইরাল ‘ভালোবাসা’ এক সংজ্ঞাবিহীন অনুভূতির নাম ২৬ দিনের ছুটিতে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এপ্রিলে বাংলাদেশ সফরে আসছেন কাতারের আমির ঈদকে ঘিরে সরব সিরাজগঞ্জের তাঁতপল্লী ফোটানো চা খেলে মারাত্মক বিপদ, বাঁচার উপায় আছে? ইফতারি প্রদর্শনের সামগ্রী নয়! বাল্টিমোর সেতু দুর্ঘটনা ভয়াবহ: বাইডেন খেলার ধরন জঘন্য, বিচ্ছিরি : পাপন মার্কিন মদদেই কি যুদ্ধবিরতি আটকে রাখছে ইসরাইল দেশে ১৭ কোটি মানুষের ২২ কোটি মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট নাসির-তামিমার মামলায় সাবেক সেনা কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণ একাত্তরে আপনি কোথায় ছিলেন, ফখরুলকে কাদের এই সরকার ১৫ বছরে গণতন্ত্র নিয়ে কোনো কাজ করেনি: ফখরুল

দুস্প্রাপ্য কেন?

| ১৪ বৈশাখ ১৪৩০ | Thursday, April 27, 2023

    ভেজাল সন্ত্রাস এবং রাষ্ট্রের দায়
    দেশে বিশ^দ্ধ খাবার দুস্প্রাপ্য কেন?

মীর আব্দুল আলীম
সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রতিটি মানুষের প্রয়োজন বিশুদ্ধ ও পুষ্টিকর খাদ্য। আর খাদ্যের নামে আমরা কি খাচ্ছি প্রতিদিন? এদেশের মানুষরুপী কিছু দানব বাংলাদেশে বিশুদ্ধ খাবার প্রাপ্তি কঠিন করে ফেলছে। এদেশে বিশ^দ্ধ খাবার অনেকটাই আজ দুস্প্রাপ্য? দেশে ভেজালদাতাদের জন্য বহু আইন প্রনয়ণ হয়েছে; সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড! তবে এ আইনের প্রয়োগ নেই বললেই চলে। ভয়ংকর কোন শাস্তির ব্যবস্থা করা না গেলে দেশে ভেজাল সন্ত্রাস কোনভাবেই বন্ধ করা যাবে না। খাদ্যে ভেজাল সন্ত্রাস,  জঙ্গিবাদ, মাদক এবং ধর্ষনের চেয়েও ভয়াবহ। এসব মানব ঘাতক তথা খুনীদেও আইনের আওতায় এনে দ্রুত বিচারের ব্যবস্থার কোন বিকল্প নেই? রাষ্ট্রকে ভেজাল খাদ্যরোধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে অবিলম্বে। এত মানুষ ভেজাল খেয়ে আক্রান্ত হচ্ছে; আর মারা যাচ্ছে এর ব্যর্থতার দায় কিন্তু রাষ্ট্রের। এ জাতিকে বাঁচাতে, সুস্থ্য রাখতে এই মুহুর্তে প্রয়োজন ভেজালদাতাকে জনসমক্ষে কঠিন শাস্তির আওতায় আনা।
ভেজালকারবারীরা ইতোমধ্যে এদেশের ২ কোটি মানুষকে কেবল কিডনি রোগে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে অবলীলায়। এর মধ্যে প্রায় ৫০-৬০ হাজার লোক ডায়ালাইসিস এর মাধ্যমে জীবন ধারণ করছে। ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা দুই লাখ ৫০ হাজার। এ ছাড়া অন্তঃসত্ত্বা মায়ের শারীরিক জটিলতাসহ গর্ভজাত বিকলাঙ্গ শিশুর সংখ্যা প্রায় ১৫ লাখ। ক্যান্সারসহ কোননা কোন রোগে আক্রান্ত আর আরও ২ কোটি মানুষ। প্রতিনিয়ত ভেজাল দ্রব্য খেয়ে কঠিন রোগে আক্রান্ত হওয়ার অপেক্ষায় আছে বাকি ১৪ কোটি মানুষ। এসব তথ্য জনমনে আতংক তৈরি করে বৈকি!
কেবল ক্যান্সারের কারণে বাংলাদেশে প্রতিদিন অন্তত ২৭৩ জনের মৃত্যু হয় বলে খোদ তথ্য দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। মন্ত্রী এক সেমিনারে বলেন, বাংলাদেশে এখন প্রায় ২০ লাখ মানুষ ক্যানসারে আক্রান্ত। প্রতি বছর আরও প্রায় এক থেকে দেড় লাখ মানুষ এর সঙ্গে যোগ হচ্ছে এই তালিকায়। মৃত্যুও হয় লাখের কাছে। রোজ মারা যায় ২৭৩ জন। ক্যান্সার সম্পর্কিত গ্লোাবোক্যানের তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রতি বছর দেড় লাখ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন। যার মধ্যে ৯১ হাজারের অধিক মানুষই মৃত্যুবরণ করেন। এদিকে জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল পরিচালক বলছেন প্রকৃত সংখ্যা তার চেয়েও বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যের উদ্ধৃতি বাংলাদেশে ৬০ ভাগ ক্যান্সার রোগী প্রায় ৫ বছরের মধ্যে মারা যায়। দেশে ক্যান্সার রোগীর মৃত্যুর হার বর্তমানে প্রায় ৮ ভাগ এবং এই সংখ্যা ২০৩০ সালে এটি ১৩ ভাগে উন্নীত হবে। দেশের উন্নয়নের কথা শুনছি, হচ্ছেও। জঙ্গি দমন করেছে সরকার, শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন এনেছে, স্বপ্নের পদ্মায় সেতু হয়েছে, দেশের বিভিন্ন জেলা, বিভাগীয় শহর এমনকি উপজেলা পর্যায়েও ফ্লাইওভার হয়েছে, দেশের বিভিন্ন নদী পথের ফেরি বদলে সেতু হয়েছে, রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে। ঘটেছে মানব উন্নয়নও। বলতেই হয় বহি:বিশ্বেও দেশের মর্যাদা বেড়েছে। এতসব কাদের জন্য? এদেশের মানুষের জন্যইতো? দেশের মানুষ সুস্থ্য না থাকলে, বেঁচে না থাকলে এসবে ফায়দা কি? মানুষকে সুস্থ্য রাখতে সরকার কঠোর হচ্ছে না কেন? এ ব্যাপারেতো রাষ্ট্রের কোন দুর্বলতা থাকার কথা নয়। তাহলে এ জায়গাটাতে সরকারের এতো কার্পণ্যতা কেন?
আমরা প্রতিনিয়ত যে খাবার খাচ্ছি তাতে একটু একটু করে দেহে বিষ জমা হচ্ছে। এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। খাদ্য ভেজালের বিষক্রিয়া দেহের ভিতর দীর্ঘদিন জমা থাকে কখনও নিঃশেষ হয়না। ফলে দেহে থাকা বিষ বংশানুক্রমে স্থানান্তর হয়। যা থেকে নানা রোগের জন্ম দেয়। খাদ্যে কেমিকেল এবং ভেজাল মিশিয়ে সমগ্র জাতিকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে এক শ্রেনীর অসাধু ভেজালকারবারী। এসব ভেজাল খাদ্য মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে ওরা নামান্তে শিশু হত্যা করছে, এদেশের বুদ্ধিজীবী, জ্ঞানী-গুণী তথা দেশের আমজনতাকে হত্যা করছে। তাই খাদ্যে ভেজাল গণহত্যার সামিল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন- ভেজাল মিশ্রিত খাদ্যের কারণে কিডনি রোগ, ক্যান্সার, হাঁপানী, অন্ত্রে ব্যাথা, পেটের পীড়া, গর্ভপাত, বন্ধ্যাত্ব, শ্বাসকষ্ট, যকৃত, প্লিহা, স্নায়ুর ক্ষতি, ফুসফুসের রোগ, ডায়াবেটিস, প্রজনন অক্ষমতা, মাংসপেশীর সংকোচন, ববি বমি ভাব, মুখে অতিরিক্ত লালা ঝরা, চোখে পানি পড়া, মাথা ব্যাথা, চোখের মণি ছোট হয়ে আসা, ঝাপসা দেখা, দুর্বলতা, তলপেটে ব্যাথা, খিঁচুনি রোগ হতে পারে। খাদ্যে ভেজাল মিশিয়ে সমগ্র জাতিকে তিল তিল করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী। ভেজাল খেয়ে মানুষ মারা যাচ্ছে, নানারোগে ভুগছে মানুষ।
ফলমুল, আমে, জামে, মাছে, ভাতে কোথায় নেই বিষ? প্রতিটি খাবারেই এখন বিষমিশানো হচ্ছে। প্রতি দিন আমরা যে খাবার খাচ্ছি তাতে কোন এক মাত্রায় বিষ মেশানো আছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর এই বিষই আমাদের তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে নিচ্ছে। কেবল হাসপাতাল গুলোতে গেলেই বুঝা যায় কত প্রকার রোগই না এখন মানব দেহে ভর করে আছে। আসলে আমরা জেনে শুনেই বিষ খাচ্ছি। ভেজাল আমাদের জীবনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। তেল, মসলা, লবণ, মুড়ি, চিনি, মাছ, দুধ, ফলমূল, সবজি, গুঁড়াদুধ, কেশতেল, কসমেটিকস সর্বত্রই ভেজাল। ফলের জুস, কোমল পানীয় এসবের বেশির ভাগই কৃত্রিম কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ফল প্রথমে ক্যালসিয়াম কার্বাইড দিয়ে পাকানো হয়, পরে ফরমালিন দিয়ে প্রিজারভ করা হয়। দু’টোই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
কয়েক বছর আগের কথা। জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে “নিরাপদ খাদ্য শীর্ষক আলোচনাসভা” চলছে। সে সভায় দেশে তিনজন ক্যাবিনেট মন্ত্রি উপস্থিত ছিলেন, ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, ভেজাল বিরোধী মহানায়ক আমার বন্ধুবর মেজিষ্ট্রেট রোকন-উ-দৌলা, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতিসহ দেশের অনেক গুণী মানুষ। সৌভাগ্যক্রমে আমি সে সভার অতিথি ছিলাম। দ্বায়িত্ব ছিল মূল প্রবন্ধ পাঠের। শুরুতেই বলছিলাম- “এখানে উপস্থিত আছেন দেশের প্রভাবশালী তিন ক্যাবিনেট মন্ত্রী, আছেন দেশের বিজ্ঞ নাগরিকগণ। আমরা যেহেতুক এদেশের মানুষ কোননা কোনভাবে প্রতিনিয়ত হয়তো খাবারে বিষ খাচ্ছি। জানিনা আমাদের ভেতরে কোন রোগ বাসা বেঁধে আছে কি না। আমরা কেউ কিডনি কিংবা ক্যান্সার আক্রান্ত কিনা। আল্লাহ মাফ করুক এমনটা চলতে থাকলে সামনে একটা সময় আসবে হয়তো ঘরে ঘরে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী মিলবে। জেলায়, উপজেলায় ক্যান্সার হাসপাতাল তৈরির কথা ভাবতে হবে সরকারকে। এ ভাবনার আগে সরকারকে দেশের মানুষের হাতে নিরাপদ খাদ্য পৌছে দেয়া দ্বায়িত্ব হয়ে পরেছে”। প্রবন্ধের একটুকু পাঠ করতেই সেদিনকার প্রধান অতিথি সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম নড়েচড়ে বসলেন। আয়োজকদের কাছে মাইকি চাইলেন। মাইক হতে নিয়েই বললেন- মূল প্রবন্ধ যিনি পাঠ করছেন মীর আব্দুল আলীম নিরাপদ খাদ্যের ব্যাপারে অতিরঞ্জিত করে বলছেন। এদেশের খাদ্য এত অনিরাপদ নয়। আরও বললেন- ভেজাল যতটুকু আছে ফলমুল বেশি করে ধুয়ে খেলেই হয়।” আমি মন্ত্রী মহোদয়ের কাছে পুরো প্রবন্ধটি পাঠের অনুমতি চাইলাম এবং পুরো প্রবন্ধটি পাঠের পর মন্তব্য আশা করলাম। আমার মূল প্রবন্ধ পাঠের পর সকলের আলোচনার পর্ব। সেদিন মুক্তিযোদ্ধামন্ত্রী, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী, রোকোন-উ-দৌলাসহ সকলে ভেজাল খাবারের ব্যাপারে সকলে শঙ্কাই প্রকাশ করলেন।
এরপর কয়েকটা বছর গেছে মাত্র। এখন কিন্তু জেলা এমনকি উপজেলা পর্যায়ে ক্যান্সার হাসপাতাল এবং চিকিৎসার কথা ভাবতে হচ্ছে সরকারকে। আসলে দেশে যারা লিডিংয়ে আছেন তাদের নিরাপদ খাদ্যের কথা বেশি ভাবতে হবে। সেই ভাবনাটা দেশে বোধ করি একটু কমই আছে। তানা হলে এতো ভেজাল খাবার কেন দেশে?আইন থাকলেও ভেজাল ব্যবসায়ীদেরকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে না কেন? অসাধু ভেজাল ব্যবসায়ীরা কিনা করছে? খাবারের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য বিরিয়ানি, জিলাপি, জুস, মিষ্টিসহ বিভিন্ন খাবারে সস্তা দামের টেক্সটাইলগ্রেড বিষাক্ত রং ব্যবহার করে থাকে, যা শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। খাবারে কৃত্রিম রং এবং জুসে ব্যবহৃত প্রিজারভেটিভ ক্যান্সার সৃষ্টিতে সহায়তা করে। এমনকি আমাদের জীবন রক্ষাকারী ওষুধও ভেজাল থেকে শতভাগ মুক্ত নয়। খেতে ফলানো চালে, ডালেও ভেজাল। ক্রোমিয়াম নামক বিষ পাওয়া যাচ্ছে ওসবে। ক্যালসিয়াম কার্বাইড এবং ইথোফেন ব্যবহার করে আম, কলা, পেঁপে, আনারস, বেদানা, ডালিম, আপেলসহ এমন কোনো ফল নেই যা পাকানো না হয়। আবার ১০০/২০০ মি. গ্রা. বোতলজাত প্রভিট (ইথোফেন) বাজারজাত করা হয়Ñ যা সবজির সজীবতা রক্ষা করে। এই প্রকারের কেমিক্যালটি ব্যবহার করে তরি-তরকারিকে দীর্ঘস্থায়ী করা হয় যা বাজারের সবজির মূল্য বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। শুধু ফলমূল, মাছ আর সবজিতেই নয় মিষ্টির দোকান হতে শুরু করে মুদিদোকানের নিত্যপণ্য আর মনোহারি প্রসাধনীর এমন কোনো বস্তু নেই যাতে কেমিক্যালের সংশ্রব নেই। মাংসও ভেজাল মুক্ত নয়। অধিকাংশই খামারের গরুকে খাওয়ানো হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত ইউরিয়াসার ও খাবার সোডা। এতে গরু দ্রুত মোটাতাজা হলেও এর মাংস মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এসব গরুর মাংস খেলে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা না দিলেও মানুষের লিভার ও কিডনি ধীরে ধীরে নিসক্রিয় হয়ে যেতে পারে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
সচেতন মহলের অভিযোগ, দেশে ল্যাব পরীক্ষা করার সুযোগ থাকলেও শিশু খাদ্যের অন্যতম উপাদান দুধে ফরমালিন মেশানোর বিষয়টিতে এখনো গুরুত্ব দেয়নি বিএসটিআই। এছাড়া সিটি কর্পোরেশন আমলে না নেয়ায় নগরীর ছোট বড় অধিকাংশই দুগ্ধজাত প্রতিষ্ঠানে অবাধে ভেজাল ও বিষাক্ত উপাদানযুক্ত দুধ, চাল, আটা, ডাল, মাছ ও ফলমূলসহ নানা বিষাক্ত খাদ্যপণ্য বিক্রি হচ্ছে। কোনো কোনো বছর রমজানের সময় মোবাইল কোর্ট বসিয়ে ভেজাল এবং নিম্নমানের খাদ্যপণ্য বিক্রেতা ও উৎপাদনকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তবে বিষাক্ত খাদ্যের ছোবল থেকে দেশ বাঁচাতে এখনো সময়োপযোগী কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি সরকার। শুধু বাজারই বিষ মেশানো খাদ্য পণ্য বিক্রি হচ্ছে না। নামিদামি হোটেল, চায়নিজ রেস্টুরেন্ট, রেস্তোরাঁ ও ফাস্টফুডের দোকানদাররা এ ধরনের খাদ্য দেদার বিক্রি করছে। আর আমরাও যেনে শুনে প্রতিনিয়ত বিষ খেয়ে চলেছি। ভাবা কি যায় আমাদের নৈতিকতার মান কোথায় নেমেছে? ছি! জাতি হিসেবে আমরা কত নিচে নেমে গেছি। দেশের মানুষকে আগে সুস্থ্য রাখতে হবে। ভেজালমুক্ত খাদ্য মানুষের হাতে তুলে দেয়ার বিকল্প নেই। সরকারকে জনগনের জন্য ভেজাল মুক্ত খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে। আমরা চাই সুস্থ্য সবল সোনার দেশ। চাই সুস্থ মানুষ।
@ লেখক- সাংবাদিক, কলামিস্ট, সমাজ গবেষক, চেয়ারম্যান, আল-রাফি হাসপাতাল লি:।