সর্বশেষ সংবাদ: দেশ ও জাতির কল্যাণে কোরআনখানি ও দোয়ার আয়োজন করেছে র্স্মাট ইলেকট্রনিক্স জাতীয় শিক্ষাক্রম অনুসরণ করছে ইবতেদায়ী মাদ্রাসা: শিক্ষামন্ত্রী রূপগঞ্জে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় যুবককে কুপিয়ে জখম করেছে কিশোর গ্যাং সদস্যরা সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মুরাদ কানাডা-আমিরাতে ঢুকতে না পেরে ফিরে আসছেন ঢাকায় বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে ——- তারা‌বো পৌরসভার মেয়র হা‌সিনা গাজী সোনারগাওঁয়ের সাদিপুর ইউ,পিতে ৩ নং ওয়ার্ডের মেম্বার নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল এলাকায় র‌্যাব-১১ এর অভিযানে ০৪ পরিবহন চাঁদাবাজ গ্রেফতার রূপগঞ্জে পুলিশ পরিদর্শকসহ ব্যবসায়ীকে হানজালা বাহিনীর হুমকি, ইটপাটকেল নিক্ষেপে দুই পুলিশ সদস্য আহত রূপগঞ্জে মন্ত্রীর পক্ষে ছাত্রলীগ নেতারদের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হলেন আহমদে জামাল

সকল শিরোনাম

দেশ ও জাতির কল্যাণে কোরআনখানি ও দোয়ার আয়োজন করেছে র্স্মাট ইলেকট্রনিক্স জাতীয় সাহিত্য সম্মাননা পেলেন দেশের ৯ গুণী ব্যক্তি কেন এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়? ‘কলামিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ’এর সভাপতি অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান চৌধুরকে; সম্পাদক মীর আব্দুল আলীম ঢাকার রাস্তায় এত ট্র্যাফিক জ্যাম কেন? জ্ঞানপাপীরা পকেট ভরে : দেশীয় শিক্ষা রসাতলে বাণিজ্যমেলার মেলার বাহিরে ইজারাবিহীন হোটেলের ছড়াছড়ি  : মেলার প্রবেশ সড়ক ঢাকা বাইপাসে ১৭ কিলোমিটার যানজট ;  ভেতরে ক্রেতাশুন্য প্যাভিলিয়ন সুশাসন গণমাধ্যম এবং কিছু কথা রাজনৈতিক সংঘাত বনাম জনসমাগমের রাজনীতি!! ব্রাজিল খেলায় সুনামি বইয়ে দিল : প্রতিপক্ষের বুকে কাঁপুনি শুরু বঙ্গবন্ধু টানেলের আংশিক খুলে দেওয়া হবে এ মাসেই ডিসেম্বরে ভারতের বিদ্যুৎ মিলবে বাংলাদেশে ১১ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা জাকারবার্গের মিয়ানমারে উপর নিষেধাজ্ঞা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হোন শর্ত ছাড়াই বাংলাদেশকে ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে আইএমএফ সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ স্থগিত কাতার বিশ্বকাপ : কন্টেইনারে রাতযাপনে গুনতে হবে ২১ হাজার টাকা ঋণের টাকায় দামি গাড়ি! পৃথিবীর তাপ রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে ১৫ নভেম্বর বিশ্বের জনসংখ্যা হবে ৮০০ কোটি আর্জেন্টিনা উগ্র ফুটবল সমর্থকগোষ্ঠী : বিশ্বকাপে ৬ হাজার আর্জেন্টাইন সমর্থক নিষিদ্ধ ২৫ কেজি সোনা নিলামে তুলবে বাংলাদেশ ব্যাংক খেলা যেন হয় শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ ডিএসইর মানবসম্পদ নীতি নিয়ে বৈঠক ডেকেছে বিএসইসি

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

মনিপুর উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ পরিচালনায় এন্তার অভিযোগ জলবায়ু ন্যায্যতা প্রদানে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সাধুবাদ জানাই কষ্টের বর্ষন বাংলাদেশে.. পণ্যমূল্য বেড়ে আমজনতার নাভিশ্বাস ‘কলামিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ’এর সভাপতি অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান চৌধুরকে; সম্পাদক মীর আব্দুল আলীম ঢাকার রাস্তায় এত ট্র্যাফিক জ্যাম কেন? সাত মাত্রার ভূমিকম্পের ধাক্কা বাংলাদেশ সামলাতে পারবে কি? বাণিজ্যমেলার মেলার বাহিরে ইজারাবিহীন হোটেলের ছড়াছড়ি  : মেলার প্রবেশ সড়ক ঢাকা বাইপাসে ১৭ কিলোমিটার যানজট ;  ভেতরে ক্রেতাশুন্য প্যাভিলিয়ন সুশাসন গণমাধ্যম এবং কিছু কথা রাজনৈতিক সংঘাত বনাম জনসমাগমের রাজনীতি!! ব্রাজিল খেলায় সুনামি বইয়ে দিল : প্রতিপক্ষের বুকে কাঁপুনি শুরু ব্রাজিলের জাদুকরী খেলা দেখে অনেকে আর্জেন্টিনা ছাড়ছেন আপনার জীবন বদলে যাবেই… বঙ্গবন্ধু টানেলের আংশিক খুলে দেওয়া হবে এ মাসেই ডিসেম্বরে ভারতের বিদ্যুৎ মিলবে বাংলাদেশে

সাত মাত্রার ভূমিকম্পের ধাক্কা বাংলাদেশ সামলাতে পারবে কি?

| ২৭ মাঘ ১৪২৯ | Thursday, February 9, 2023

 ---মীর আব্দুল আলীম : ৭.৮ মাত্রার মাত্র এক মিনিটের ভূমিকম্পেই লন্ডভন্ড তুরস্কেও পরিকল্পিত গাজিয়ানতেপ শহর। সঙ্গে প্রতিবেশী দেশ সিরিয়ার সীমান্ত শহরগুলোও। রিখটার স্কেলে যদি সাত মাত্রার ভূমিকম্প হয়, সেই ধাক্কা বাংলদেশ সামলাতে পারবে কি? ভূমিকম্প বিশ্লেষকরাতো বলছেন- কেবল ঢাকায় ধ্বসে পড়বে কয়েক হাজার ভবন, মৃত্যু হবে অন্তত দুই থেকে তিন লাখ মানুষের।
গত ১৫ বছরে ছোট-বড় ভূমিকম্পে ১৪১ বার কেঁপে ওঠে বাংলাদেশ। ২০১৬ সালের ৪ জানুয়ারি ৬ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল বাংলাদেমে হয়েছিল। হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে সেবার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছোট মাঝারি ভূমিকম্পগুলো ভালো বার্ত দেয় না। তা বড় ভূমিকম্পের আলামত বটে! ভুমিকম্পবিদরা বলেন- বড় ভূমিকম্পের শত বছরের মধ্যে আরেকটি বড় ভূমিকম্প হয়। বড় ভুমিকম্পের ইতিহাস বলে শত বছর ঘনিয়ে এসেছে বাংলাদেশের। সে দিক থেকেও আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বড় ধরনের ভূমিকম্পের আশঙ্কা প্রকট হয়ে উঠেছে।
এত শংকা এতো ভুমিকম্পের সম্ভাবনার কথা জানছি আমরা তার পরেও বাংলাদেশ কতটা প্রস্তুত? বাংলাদেশে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পের আশংকা’র কথাও শুনছি আমরা। আমাদের পত্রিকাগুলো এমন সংবাদই ছাপছে। তাতে করে  ভূমিকম্প নিয়ে দেশে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে অনেক। যদি হয় ৯ মাত্রারর ভুমিকম্প বাংলাদেশের কি হবে ভাবা কি যায়? যে দেশটার ইট বালি রড সিম্টে সব কিছুতেই দুইনাম্বারী সেখানে অপরিকল্পিত বিল্ডিংগুলোর কি হবে? কি হবে জনগনের? এতো কিছুর পরেও বাংলাদেশ মোটেও প্রস্তুত নয়। ভুমিকম্প পরবর্তি উদ্ধার কাজের তেমন প্রস্তুতি নেই বাংলাদেশের। এ বিষয়ে বাজেটেও থাকে দুর্বল বরাদ্ধ। এ অবস্থায় আল্লাহর উপর ভরসা ছাড়া আমাদের আর কোন উপায় দেখছি না।
তুরস্ককের ভুমিকম্পের ভয়াবহতা দেখে মানুষ ভয়ে আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকার অনেকে এমন ভয় থেকে ঘুমের মধ্যে চিৎকার করে উঠছেন। দেশের প্রায় সব পত্রিকায় ছাপা হয়েছে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প হলে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে ঢাকা ও তার আশেপাশের এলাকা। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন এরকম হলে ঢাকা শহরটি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের ১৪ কোটি মানুষ। কোনো কোনো পত্রিকায় বলা হয়েছে এ জাতীয় ভূমিকম্পে ৬ থেকে ২০ ফুট উপরে উঠে যাবে মাটি। একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- তুরস্কে যে ভূমিকম্প হয়েছে, এর চেয়ে ছোট, অর্থাৎ, রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হলেও শুধু ভবন ধস নয়, ঢাকার অপরিকল্পিত বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও গ্যাসলাইন এ নগরকে একটি অগ্নিকূপে পরিণত করতে পারে। কয়েক হাজার ভবন ধ্বসে পড়বে। মৃত্যু হতে পারে আড়াই থেকে তিন লাখ মানুষের। কারণ, আমাদের ভবনগুলো এখনও নিরাপদভাবে তৈরি হচ্ছে না। বুয়েটের বিভিন্ন সময়ে করা জরিপে দেখা যায়, ঢাকায় ১৩ লাখ, চট্টগ্রামে ৩ লাখ ও সিলেটে ১ লাখ বহুতল ভবন রয়েছে। এসব ভবনের ৭৫ শতাংশ হচ্ছে ছয়তলা বা তার চেয়েও উঁচু। ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হলে এই ভবনগুলো ও এর বাসিন্দারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। সরকারের সমন্বিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচির সমীক্ষাতেই বলা হয়েছে, ৭ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্প হলে রাজধানীতে প্রায় ৭২ হাজার ভবন ধসে পড়তে পারে।
বিশেষজ্ঞরা তাদের গবেষণা থেকে বলেছেন এখনই ভূমিকম্প হবে তা বলা যাবে না তা পাঁচশ’ বছর পরেও হতে পারে। দেশে কোথায় কবে কত মাত্রার ভূমিকম্প হবে কেউ আগে-ভাগে তা বলতে পারে না। সবই ধারণাপ্রসূ। হতেও পারে নাও হতে পারে। ভূমিকম্প কখন হবে, কবে হবে এবং ভূমিকম্প যেহেতু প্রতিরোধ করা যাবে না তাই এ নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে দেশের মানুষকে অসুস্থ করে দেয়ার কোনো মানে হয় না। ভূমিকম্পের বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, ভূমিকম্প পরবর্তী সময়ে উদ্ধারে প্রস্তুতি থাকতে হবে। জনমনে আতঙ্ক তৈরি না করে জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে। জাপানে প্রায়ই ভূমিকম্প হয়। জাপান ভয়কে জয় করেছে। তাই তাদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খুবই কম। আমাদের সরকার আমাদের জনগণ ভূমিকম্পের ব্যাপারে সচেতন নয়। ঢাকা শহরে যতগুলো স্থাপনা থাকা দরকার তার চেয়ে ৫০ গুণ স্থাপনা তৈরি হলেও সরকারে এ ব্যাপারে মাথাব্যথা নেই। এখনও এ শহরে স্থাপনা নির্মাণের হরেদরে অনুমতি দেয়া হচ্ছে। শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়, বাণিজ্যিক কার্যালয়, সচিবালয়সহ অন্যান্য অফিস শহরের বাইরে করার পরিকল্পনা সেই বহু আগে নেয়া হয়েছে কিন্তু তার বাস্তবায়নের কোনোই লক্ষণ নেই। উল্লেখিত অফিস-আদালতগুলো শহরের বাইরে হলে ঢাকার চাপ অর্ধেক কমে যাবে। মানুষ আর ঢাকামুখী হবে না। ঢাকা শহরে লোকজনের বসবাস কমে যাবে। তাতে ঢাকার চাপ কমবে। তখন ভূমিকম্প হলেও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিচে নেমে আসবে।
সরকারের তরফ হতে যন্ত্রপাতি ক্রয় ও স্বেচ্ছাসেবক প্রশিক্ষণের কথা বলা হলেও ভূমিকম্প-পরবর্তী বিপর্যয় সামাল দেয়ার ন্যূনতম প্রস্তুতিও যে আমাদের নেই তা স্পষ্ট। ব্যাপক অভাব রয়েছে জনসচেতনতারও। ভূমিকম্পের ব্যাপারে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার কোনোটাই সরকারের পক্ষ থেকে করা হচ্ছে না। ইতোমধ্যে অনেক মূল্যবান সময় অপচয় হয়েছে। আর বিলম্ব করা সমীচীন হবে না। ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণের প্রকৃত সময় এখনই। ভূমিকম্প মোকাবেলায় সর্বদা আমাদের নিজেদেরই প্রস্তুত থাকতে হবে। ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবিলার ক্ষেত্রে আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত দু’টি। প্রথমত. ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রাকে নিম্নতম পর্যায়ে রাখা এবং দ্বিতীয়ত. ভূমিকম্প-পরবর্তী বিপর্যয় সামাল দেওয়া।
বাংলাদেশ একটি আরও বড় মাত্রার ভূমিকম্পের দ্বারপ্রান্তে বিশেষজ্ঞদের এমন সতর্কবাণীর পর এ বিপদাশংকা উড়িয়ে দেয়া যায় না কিছুতেই। এ অবস্থায় কখন যে ভূমিকম্প আঘাত হানে; কখন যে কে তার শিকার হয়, অজানা এ ভয়ে সবার বুক দুরু দুরু। ২৫ এপ্রিলের ভূমিকম্পের পর আতঙ্ক আরও বেড়েছে। আর এ ভয় যেন জয় করার কোনো উপায় নেই। কখন হবে ভূমিকম্প? এ আতঙ্ক যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না। এ আতঙ্ক গোটা দেশবাসীকে পেয়ে বসেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কেবল ভূমিকম্পই নয়, দেশের উপকূলীয় এলাকা ঘিরে ভয়াবহ সুনামি সৃষ্টির জন্য সাইসমিক গ্যাপ বিরাজমান রয়েছে। এ গ্যাপ থেকে যে কোনো সময় সুনামিও হতে পারে। তাদের মতে, বঙ্গোপসাগরের উত্তরে আন্দামান থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সাবডাকশন জোন বরাবর ৬শ’ কিলোমিটারের একটি সাইসমিক গ্যাপ রয়েছে। আমাদের দেশে শক্তিশালী ভূমিকম্প হওয়ার জন্য যথেষ্ট শক্তি এই সাইজমিক গ্যাপে জমা হয়ে আছে। এই সাইজমিক গ্যাপ আমাদের জন্য অশনি সঙ্কেত। এখান থেকে ৮ মাত্রার মতো শক্তিশালী ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর তা যদি সাগরতলে হয় তাহলে সেই ভূমিকম্প সুনামি সৃষ্টি করতে পারে। বাংলাদেশে শক্তিশালী ভূমিকম্প এবং সুনামিরই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ অবস্থায় কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা হলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেকাংশে কমে যাবে।
ভূমিকম্পে বিল্ডিং সাধারণত দুমড়েমুচড়ে গায়ে পড়ে না। হেলে পড়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে। এ সময় নিজেকে রক্ষা করতে হবে। ভিম কিংবা কলামের পাশে শক্ত কোন কিছুর পাশে থাকতে হবে। বিশেষ করে খাট কিংবা শক্ত ডাইনিং টেবিল হলে ভালো হয়। আগে থেকেই আশ্রয়ের জায়গা ঠিক করে নিতে হবে। ঘরে রাখতে হবে সাবোল এবং হাতুড়ি জাতীয় কিছু দেশীয় যন্ত্র। ভূমিকম্প হলে অনেকেই তড়িঘরি করে নিচে ছোটেন। তাঁরা জানেন না ভূমিকম্পে যত ক্ষতি হয় তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হয় অস্থির লোকদের ছোটাছুটিতে। ভূমিকম্প খুব অল্প সময়ের মধ্যে শেষ হয়। প্রলয় যা হবার তা হয় কয়েক সেকেন্ড কিংবা মিনিট সময়ের মধ্যে। এ সময়ে আপনি কি নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারবেন? রাস্তায় গিয়ে তো আরও বিপদে পড়তে হবে আপনাকে। বাড়ি ঘর হেলে গিয়ে তো রাস্তার উপরই পড়বে। বরং রাস্তায় থাকলে চাপা পড়ে, মাথা কিংবা শরীরের উপর কিছু পড়ে আপনি হতাহত হতে পারেন। যারা এক তলা কিংবা দোতলায় থাকেন পাশে খালি মাঠ থাকেলে দ্রুত দৌড়ে যেতে পারেন। সেখানে যেতে যদি সমস্যা থাকে তা হলে সৃষ্টিকর্তাকেই ভরসা করে শক্ত কোনো কিছুর আড়ালে অবস্থান নেয়াই শ্রেয়। রাজধানী ঢাকায় যারা বসবাস করেন যারা উঁচু বিল্ডিংয়ে থাকেন এদের ভয়টা যেন একটু বেশি। তাদের জ্ঞাতার্থে বলছি, আমাদের দেশে ৬ তলার উপরে নির্মিত বিল্ডিংগুলো সাধারণত বিল্ডিং কোড মেনেই হয়। বড় বিল্ডিংয় তৈরির ক্ষেত্রে অনেকেই ঝুঁকি নিতে চান না। একটু দেখভাল করেই নির্মাণ করেন। আর এসব বিল্ডিং পাইলিং হয় অনেক গভীর থেকে এবং বেজ ডালাই দেয়া হয় পুরো বিল্ডিংয়ের নিচ জুড়ে তাই শুধু কলামে দাঁড়িয়ে থাকা বিল্ডিং থেকে হাইরাইজ বিল্ডিং কিছুটা হলেও নিরাপদ বলা যায়।
ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবেলার ক্ষেত্রে আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত দুইটি। প্রথমত, ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রাকে নিম্নতম পর্যায়ে রাখা এবং দ্বিতীয়ত, ভূমিকম্পপরবর্তী বিপর্যয় সামাল দেওয়া। বাংলাদেশ একটি আরও বড় মাত্রার ভূমিকম্পের দ্বারপ্রান্তে বিশেষজ্ঞদের এমন সতর্কবাণীর পর আর চুপ করে থাকা যায় না। এ অবস্থায় কখন যে ভূমিকম্প আঘাত হানে; কখন যে কে তার শিকার হয়, অজানা এ ভয়ে সবার বুক ধুরু ধুরু। একেকটা ভূমিকম্পের পর আতংক আরও বেড়ে যায়। আর এ ভয় যেন জয় করার কোনো উপায় নেই। এ আতঙ্ক গোটা দেশবাসীকে পেয়ে বসেছে। ভূমিকম্প কোথায় হবে? কখন হবে এবং তা কত মাত্রায় হবে তা আগবাড়িয়ে কেউ বলতে পারেন না। ভূমিকম্পের বিষয়টি সম্পূণর্ই অনুমেয়। তবে বড় ধরনের ভূমিকম্প হওয়ার কিছু পূর্বলক্ষণ আছে। যা বাংলাদেশে বেশ লক্ষণীয়। এর লক্ষণ হিসেবে প্রায়ই দেশের কোথাও না কোথাও মৃদু ও মাঝারি মাত্রায় ভূমিকম্প হচ্ছে।
ভূমিকম্প নিয়ে কমবেশি আতঙ্ক সবার মধ্যেই আছে। ছবির মতো সুন্দর তুরস্কে ভূমিকম্পে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তাতে বাংলাদেশেও অনেকে আতঙ্কে ভুগতে পারেন। আতংকিত হলে চলবে না। ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি ন্যূনতম পর্যায়ে রাখার জন্য এ বিষয়ে ব্যাপক জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। সরকারকেই এ বিষয়ে মুখ্য দায়িত্ব পালন করতে হবে, যাতে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ন্যূনতম পর্যায়ে থাকে। একটি ভবন নির্মাণের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সব নিয়ম মেনে করছে কি না, তা কঠোরভাবে তদারক করতে হবে। ভুমিকম্প পরবর্তি উদ্ধার কাজের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৥ লেখক- মীর আব্দুল আলীম, সাংবাদিক, কলামিস্ট ও সমাজ গবেষক।