সর্বশেষ সংবাদ: জাতীয় শিক্ষাক্রম অনুসরণ করছে ইবতেদায়ী মাদ্রাসা: শিক্ষামন্ত্রী রূপগঞ্জে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় যুবককে কুপিয়ে জখম করেছে কিশোর গ্যাং সদস্যরা সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মুরাদ কানাডা-আমিরাতে ঢুকতে না পেরে ফিরে আসছেন ঢাকায় বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে ——- তারা‌বো পৌরসভার মেয়র হা‌সিনা গাজী সোনারগাওঁয়ের সাদিপুর ইউ,পিতে ৩ নং ওয়ার্ডের মেম্বার নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল এলাকায় র‌্যাব-১১ এর অভিযানে ০৪ পরিবহন চাঁদাবাজ গ্রেফতার রূপগঞ্জে পুলিশ পরিদর্শকসহ ব্যবসায়ীকে হানজালা বাহিনীর হুমকি, ইটপাটকেল নিক্ষেপে দুই পুলিশ সদস্য আহত রূপগঞ্জে মন্ত্রীর পক্ষে ছাত্রলীগ নেতারদের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হলেন আহমদে জামাল ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই দেশে ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু

সকল শিরোনাম

জাতীয় সাহিত্য সম্মাননা পেলেন দেশের ৯ গুণী ব্যক্তি কেন এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়? ‘কলামিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ’এর সভাপতি অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান চৌধুরকে; সম্পাদক মীর আব্দুল আলীম ঢাকার রাস্তায় এত ট্র্যাফিক জ্যাম কেন? জ্ঞানপাপীরা পকেট ভরে : দেশীয় শিক্ষা রসাতলে বাণিজ্যমেলার মেলার বাহিরে ইজারাবিহীন হোটেলের ছড়াছড়ি  : মেলার প্রবেশ সড়ক ঢাকা বাইপাসে ১৭ কিলোমিটার যানজট ;  ভেতরে ক্রেতাশুন্য প্যাভিলিয়ন সুশাসন গণমাধ্যম এবং কিছু কথা রাজনৈতিক সংঘাত বনাম জনসমাগমের রাজনীতি!! ব্রাজিল খেলায় সুনামি বইয়ে দিল : প্রতিপক্ষের বুকে কাঁপুনি শুরু বঙ্গবন্ধু টানেলের আংশিক খুলে দেওয়া হবে এ মাসেই ডিসেম্বরে ভারতের বিদ্যুৎ মিলবে বাংলাদেশে ১১ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা জাকারবার্গের মিয়ানমারে উপর নিষেধাজ্ঞা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হোন শর্ত ছাড়াই বাংলাদেশকে ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে আইএমএফ সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ স্থগিত কাতার বিশ্বকাপ : কন্টেইনারে রাতযাপনে গুনতে হবে ২১ হাজার টাকা ঋণের টাকায় দামি গাড়ি! পৃথিবীর তাপ রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে ১৫ নভেম্বর বিশ্বের জনসংখ্যা হবে ৮০০ কোটি আর্জেন্টিনা উগ্র ফুটবল সমর্থকগোষ্ঠী : বিশ্বকাপে ৬ হাজার আর্জেন্টাইন সমর্থক নিষিদ্ধ ২৫ কেজি সোনা নিলামে তুলবে বাংলাদেশ ব্যাংক খেলা যেন হয় শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ ডিএসইর মানবসম্পদ নীতি নিয়ে বৈঠক ডেকেছে বিএসইসি ঋণ পাচ্ছে বাংলাদেশ

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

কষ্টের বর্ষন বাংলাদেশে.. পণ্যমূল্য বেড়ে আমজনতার নাভিশ্বাস ‘কলামিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ’এর সভাপতি অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান চৌধুরকে; সম্পাদক মীর আব্দুল আলীম ঢাকার রাস্তায় এত ট্র্যাফিক জ্যাম কেন? সাত মাত্রার ভূমিকম্পের ধাক্কা বাংলাদেশ সামলাতে পারবে কি? বাণিজ্যমেলার মেলার বাহিরে ইজারাবিহীন হোটেলের ছড়াছড়ি  : মেলার প্রবেশ সড়ক ঢাকা বাইপাসে ১৭ কিলোমিটার যানজট ;  ভেতরে ক্রেতাশুন্য প্যাভিলিয়ন সুশাসন গণমাধ্যম এবং কিছু কথা রাজনৈতিক সংঘাত বনাম জনসমাগমের রাজনীতি!! ব্রাজিল খেলায় সুনামি বইয়ে দিল : প্রতিপক্ষের বুকে কাঁপুনি শুরু ব্রাজিলের জাদুকরী খেলা দেখে অনেকে আর্জেন্টিনা ছাড়ছেন আপনার জীবন বদলে যাবেই… বঙ্গবন্ধু টানেলের আংশিক খুলে দেওয়া হবে এ মাসেই ডিসেম্বরে ভারতের বিদ্যুৎ মিলবে বাংলাদেশে যুদ্ধ না হলেও দেশে অর্থনৈতিক মন্দা আসত: জিএম কাদের ১১ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা জাকারবার্গের

মানবজাতির কি হবে?

| ১৩ বৈশাখ ১৪২৭ | Sunday, April 26, 2020

---প্রায় ছয় শ বছর আগে চতুর্দশ শতাব্দীতে ব্ল্যাক ডেথ যখন চীনে প্রথম দেখা দেয়, সেই মহামারি ইউরোপ পর্যন্ত আসতে সময় নিয়েছিল প্রায় ১০ বছর। এতে ইউরোপ-এশিয়ার প্রায় ২০ কোটি বা ৩৭ শতাংশ মানুষের মৃত্যু হয়। ইতালির ফ্লোরেন্স শহরের এক লাখ অধিবাসীর মধ্যে মারা যায় ৫০ হাজার। ১৫২০ সালের মার্চে গুটিবসন্ত নিয়ে ইউরোপ থেকে প্রথম নৌকা ভিড় করে মেক্সিকোর পোতাশ্রয়ে। পুরো মেক্সিকোতে সেটি ছড়িয়ে পড়ে ডিসেম্বরের মধ্যেই। মারা যায় ২০ লাখ মানুষ, বেঁচে থাকে মাত্র ২ লাখ।

এদিকে এবারের করোনাভাইরাস চীন থেকে ইউরোপে আসতে সময় নিয়েছে মাত্র দুই সপ্তাহ। এই উদাহরণ দিয়ে লোকরঞ্জনবাদীরা বলেই চলেছেন দেশে দেশে দেয়াল তোলার কথা, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার কথা। এই সুযোগে তাঁরা একপ্রস্থ বিশ্বায়নের বিরোধিতাও করে নিচ্ছেন। যারা ‘আমরা আমরা’ ভুলে শুধু ‘আমি আমি’ করে তাদের এখন পোয়াবারো। তারা মোক্ষম যুক্তি পেয়েছে ইতালির ঘটনায়। উত্তর ইতালির যে স্থানে করোনাভাইরাসের প্রথম সূত্রপাত ঘটে সেখানে প্রচুর টেক্সটাইল মিলের কারখানা, চীনের সঙ্গে ওই শহরের ব্যবসা অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। চীনের সঙ্গে যদি ইতালি তাৎক্ষণিক সম্পর্ক ছিন্ন করত তবে কি মহামারি আজ এই পর্যায়ে পৌঁছাত?
কঠিন যুক্তি, আপাতত অবশ্যই সঠিক কথা। কিন্তু সুবিধাবাদী রাজনীতিকেরা দেশে দেশে মানুষে মানুষে বিভাজনের এই সুযোগ শুধু করোনাকালেই সীমাবদ্ধ রাখবেন না সেটি বোঝা কষ্টকর নয়। ট্রাম্প ইতিমধ্যেই বলেছেন, ‘দেয়াল তোলার কথা কেন আমি বারবার বলি তার গুরুত্ব নিশ্চয়ই সবাই এখন বুঝবে।’ কিন্তু যখন মধ্যযুগের ওই প্লেগ চীন থেকে এসে ইউরোপে গণহারে মানুষ মেরেছে তখন বিশ্বায়ন বলতে কিছুই ছিল না, ব্যবসায়িক যোগাযোগ ছিল নামমাত্র। কিন্তু তাতে কি মহামারি আটকে ছিল? আজকে ব্রিটেনের দৈনন্দিন শাকসবজি, ডাল ,আটা ইত্যাদি নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যের ৩০ শতাংশ যায় ইউরোপ থেকে। বিশ্বায়নের মাত্রা এত দূর হওয়ার পরও এবারের মহামারিতে মৃত্যুর সংখ্যা এখন পর্যন্ত অতীতের মহামারি থেকে থেকে কম নয় কি? কিন্তু মৃত্যুর সংখ্যা কম হলেও বিশ্বায়নের প্রভাবে মহামারি ছড়াতে তো সময় লাগছে কম। তাহলে বিশ্বায়ন-সমস্যা তো রয়েই যাচ্ছে।

মানুষের ভেতরের সবচেয়ে সৌন্দর্যমণ্ডিত বৈশিষ্ট্য তারা সামাজিক জীব। তারা একে অপরের বিপদে অগ্রগামী হয়, নানা প্রকার সামাজিক অনুষ্ঠানে বহু মানুষের সমাগম ঘটে। ভাইরাসের মতো গোপন এককোষী প্রাণী মানুষের এই অনিন্দ্যসুন্দর আচরণের সুযোগ নেয়। বর্তমান পৃথিবীর মানুষ ইতিহাসের যেকোনো সময়ের তুলনায় অধিক সামাজিক আর নিবিড় যোগাযোগের ভেতর বাস করে। অবশ্যই এটি বিশ্বায়নের ফল আর এর কারণে যেকোনো ভাইরাস মানবজাতিকে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে দ্রুতহারে বিপদে ফেলতে সক্ষম।

কিন্তু ঘটনার বিপরীতেও ঘটনা আছে। ভুলে গেলে চলবে না মানবজাতির ইতিহাসে বিজ্ঞান এই মুহূর্তে সবচেয়ে শক্তিশালী এবং এটি শুধু শক্তিশালীই হতে থাকবে, তাসের ঘরের মতো বিজ্ঞানের জয়যাত্রা রোধ হবে না। আশার কথা হলো করোনাভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স বের করতে বিজ্ঞানীরা সময় নিয়েছেন মাত্র দুই সপ্তাহ। বিজ্ঞান যখন মহামারির কারণ বুঝতে পারে তখন তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা সহজ হয়ে যায়।
১৯৬৭ সালেও গুটিবসন্তে আক্রান্ত হয় ১৫ লাখ মানুষ, মারা যায় ২ লাখ। কিন্তু এর ভ্যাকসিনের ব্যাপক প্রচার ও প্রয়োগের ফলে ১৯৭৯ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ঘোষণা করে, মানবজাতির জয় হয়েছে কারণ বসন্তরোগ সম্পূর্ণ নির্বাপিত হয়েছে। ২০১৯ সালে পৃথিবীর কোথাও একটি মানুষের মৃত্যু তো দূরের কথা, বসন্ত রোগে একটি মানুষ আক্রান্তও হয়নি।
বিজ্ঞানের দিকে চেয়ে থাকা ছাড়া বিশ্ব আর কী কী করতে পারে? এই মুহূর্তে পৃথিবীর দরকার সঠিক দক্ষ নেতৃত্ব আর বৈশ্বিক সংহতি। ২০১৪ সালের ইবোলা আক্রমণে যখন পশ্চিম আফ্রিকা পর্যুদস্ত, ইতিহাসবিদ ইউভাল হারারি ‘ফিন্যান্সিয়াল টাইমস’–এ লিখেছেন, তখন পৃথিবীতে পরিপক্ষ নেতৃত্ব ছিল যারা ওই মহামারিতে প্রজ্ঞাসুলভ ভূমিকা রেখেছিল। কিন্তু ২০১৬ সালের পর থেকে পৃথিবীর অক্ষ ঘুরে গেছে। আমেরিকা নেতার পদ থেকে পদত্যাগ করেছে। এই নেতৃত্ব মনে করে পৃথিবীর প্রতি তাদের কোনো দায় নেই, তাদের আছে শুধু ‘স্বার্থ’ (Interest)। আমরা দেখতে পেলাম কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই আমেরিকা ইউরোপের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করল, তবে ব্রিটেন বাদে। করোনার ভ্যাকসিনের ওপর একক অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জার্মানির একটি ফার্মাসিউটিক্যালসকে এক বিলিয়ন ডলার অফার করেছিল তারা।
এত কিছুর পরও যদি আমেরিকা আজকের মহামারি থেকে উদ্ধারে বিশ্বনেতৃত্বের আসনে আসতে চায়, বাকি বিশ্ব কি এমন একটি দেশকে বিশ্বাস করতে চাইবে যে দেশের প্রশাসন কোনো কিছুর দায় নিতে চায় না। যারা ভুল স্বীকারকে দুর্বলতা মনে করে, নিয়মিতভাবে সব দোষ অন্যের ওপর চাপিয়ে নিজেরা শুধু বাহবা নিতে ইচ্ছুক এবং যাদের প্রধান মোটো হলো ‘মি ফার্স্ট’?
নেতৃত্বের এই খড়াকালেই আরেক বিপদ আমরা দেখতে পারছি। মানুষ যে আসলেই ‘মানুষ’, তা প্রমাণ করার সময় সকালে–বিকেলে আসে না, তা আসে কালেভদ্রে। দুর্যোগের সময় ভবিষ্যৎ বিপদের কথা ভেবে পৃথিবীব্যাপী মানুষের ক্রোধ, লোভ, ভোগবাদিতার উগ্র রূপ ধরা পড়েছে। সুপারশপে খালি তাকের দিকে বৃদ্ধদের তাকিয়ে থাকার মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের এই রূপকে প্রকাশিত করেছি। কিন্তু বিপদের এই সময়ে আমাদের প্রয়োজন আরও বেশি বৈশ্বিক সংহতি আর সহমর্মিতা। জার্মানি নিজে বিপদে থেকেও সম্প্রতি ইতালি এবং ফ্রান্স থেকে ভাইরাসে আক্রান্ত কয়েকজন গুরুতর রোগী নিজেদের বিমানে উড়িয়ে এনে চিকিৎসা দিচ্ছে। পৃথিবীর এই মুহূর্তে এটিই সবচেয়ে বেশি দরকার।
মানুষের কোনো বিপদই মানুষের বিবর্তনকে রুখে দিতে পারেনি। মানুষ বিবর্তনের ধারা বেয়ে আজকে পৃথিবী শাসন করছে, তারা ঘোষণা করেছে ‘মানুষই’ শ্রেষ্ঠ। এই মানুষেরই রয়েছে অসীম ভালোবাসার ক্ষমতা। বাংলাদেশের আনাচকানাচে আজ তরুণেরা মানুষের সাহায্যার্থে পথে নেমেছেন। মহাবিপদের এই দিনে মানবজাতিকে জয়ী হতে গেলে তাই ভালোবাসার মতো অপূর্ব এই ক্ষমতার কথা ভুলে গেলে চলবে না।
*লেখক : জার্মানিতে কম্পিউটার সায়েন্সে মাস্টার্স, বার্লিনের এক প্রতিষ্ঠানে রোবটিকস অটোমেশনে কর্মরত। jahid_cis@yahoo.com