……..শততম জয়ে সিরিজ বাংলাদেশের
|
১৬ আশ্বিন ১৪২৩ |
Saturday, October 1, 2016
নিউজ বাংলাদেশ, ঢাকা : একদিনে দুটি অর্জন দু’দিন আগেই হতে পারতো। কিন্তু গত বুধবার দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আফগানদের ঝলসানো ব্যাটিং ভেস্তে যায় বাংলাদেশের স্বপ্ন। সিরিজ আর শততম ম্যাচ জয়ের সেই স্বপ্ন অবশেষে সফল হলো লাল-সবুজের দেশের। তিন ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে জিতে (২-১) সিরিজ জয়ের পাশাপাশি একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ জয়ের সেঞ্চুরিও করলো বাংলাদেশ। মাশরাফিরা ১৪১ রানে হারিয়ে দেয় আফগানিস্তানকে।
একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছ থেকে সমীহ আদায়ের আসনটা অলংকৃত করেছে অনেক আগেই। দীর্ঘ ৩৯ বছরের পথচলায় অসংখ্য প্রাপ্তি আর প্রত্যাশার পাতাটা খুব বেশি না হলেও উল্লেখ করার মতোই। একদিনের ক্রিকেটে অদ্যাবধি ৩১৫টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। যার মধ্যে জয় পেয়েছে ১০০টি। বাংলাদেশ দলের এমন রাজসিক অর্জনের বিপরীতে হারের তিক্ততা কিন্তু কম নয়। গতকালের ম্যাচের আগে ৩১৪ ওডিআই ম্যাচের বিপরীতে ২১১টি ম্যাচে পরাজয়ের ক্ষত। তারপরও কম কিসে। যে দলে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান, সেরা পেসার মুস্তাফিজুর রহমান আর মাশরাফির মতো দলনেতা রয়েছে, সেই দলের প্রাপ্তিটা কম হলেও বাহবাটা ঠিকই আকাশচুম্বী। বিশ্ব ক্রিকেটের মানচিত্রে বাংলাদেশ জায়গা করে নেয় ১৯৭৭ সালে। ওই সময়ে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হয় আইসিসি ট্রফি। রাকিবুল হাসানের নেতৃত্বে বীরের বেশে টুর্নামেন্ট অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ। ওই লড়াইয়ে ৪ ম্যাচের দু’টিতেই জয় পায় টাইগাররা। এরপর ১৯৮৬ সালের এশিয়া কাপে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম পা রাখে বাংলাদেশ। এরপর আপন গতিতে এগুচ্ছে লাল-সবুজের দেশ।
শনিবার টসে জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ৫০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৭৯ রান করে মাশরাফিরা। বাংলাদেশের দলীয় ২৩ রানে সৌম্য সরকারের উইকেটের পতনের পরে সাব্বির রহমানকে সঙ্গে নিয়ে রানের গতি বাড়িয়ে নিতে থাকেন তামিম। সাব্বির ও তামিমের মধ্যে ১৪০ রানের জুটি ভাঙ্গেন আফগান বোলার রহমত শাহ। ব্যাটে বলে টাইমিং না হওয়ায় নওরোজ মাঙ্গালের হাতে ধরা পড়ার আগে নিজের তৃতীয় অর্ধশত রান তুলে নিয়েছিলেন সাব্বির, ৭৯ বলে ৬টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৬৫। দলীয় ১৬৩ রানে সাব্বির ফেরত যাওয়ার পরে সাকিবের সঙ্গে তামিমের জুটি জমে ওঠে। দাওলাত জাদরানের করা ৩৭তম ওভারের প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে নিজের সপ্তম ওয়ানডে সেঞ্চুরিটি তুলে নেন তামিম।
৩৯ ওভারে তামিম মোহাম্মদ নবীর বলে মারতে গিয়ে নাভিন উল হকের হাতে ধরা পড়েন। দলীয় রান তখন ২১২। ১১৮ বলে ১১৮ রানের ইনিংসের পথে ১১টি চার ও ২টি ছক্কা মেরেছেন তিনি। তামিম আউট হওয়ার পরে উইকেটে মড়ক লেগে যায়। মাত্র ১১ বলের ব্যবধানে তিন উইকেটের পতনে বাংলাদেশের বড় স্কোরের সম্ভাবনা স্তিমিত হয়ে যায়।
৪৩ ওভারে দাওলাত জাদরানের করা প্রথম বলে উইকেটের পেছনে মোহাম্মদ শেহজাদের হাতে ধরা পড়ার আগে ১৭ রান করেছিলেন সাকিব। ৪৪তম ওভারের মুশফিকুর রহিম এলবিডব্লিউ হন রশিদ খানের বলে। একই ওভারের পঞ্চম বলে স্টাম্পিংয়ের শিকার হন মোসাদ্দেক। ৪৩তম ওভারের প্রথম বল থেকে ৪৪তম ওভারের পঞ্চম বল পর্যন্ত এই ১১ বলে তিন উইকেটের পতন হয় বাংলাদেশের। দীর্ঘদিন পরে দলে ফেরা মোশাররফ ১৪ বল খেলে ৪ রান করে ফেরত যান। মিরওয়াইস আশরাফের করা শেষ ওভারে ১০ রান আসে বাংলাদেশের। আফগানিস্তানের মোহাম্মদ নবী, মিরওয়াইস আশরাফ ও রশিদ খান দুটি করে উইকেট শিকার করেন।
জবাবে জয়ের জন্য ২৮০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে মোটেও সুবিধা করতে পারেনি আফগানিস্তান। তারা ৩৩.৫ ওভার খেলে সবকটি উইকেট বিলিয়ে ১৩৮ রান সংগ্রহ করে। দলের হয়ে উল্লেখযোগ্য রান করেন রহমত শাহ ৩৬, নওরোজ মঙ্গল ৩৩ ও নজীবুল্লাহ ২৬। ম্যান অব দ্য সিরিজ ও ম্যান অব দ্য ম্যাচ – তামিম ইকবাল (বাংলাদেশ)।