ব্যাহত হচ্ছে শিল্প উৎপাদন: বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত জনজীবন
|
১৪ আষাঢ় ১৪২৩ |
Tuesday, June 28, 2016
মাহবুব মনি: দিনরাত লোডশেডিং আর লোডশেডিং। মোটেও স্বস্তিতে নেই জনজীবন। চারদিকে বিদ্যুতের জন্য হাহাকার। ক্রমেই ক্ষিপ্ততা বাড়ছে শিল্প কারখানার মালিক ও সাধারণ মানুষের মনে। আদৌ কি এ সমস্যার সমাধান হবে? প্রশ্নবিদ্য আজ বিদ্যুৎ বিভাগ। এদিকে দেশের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড ও লোডশেডিং না থাকার বিবৃতি দেওয়া সত্বেও ডেমরার বাস্তব পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন। ডেমরা ও আশপাশের এলাকায় বিদ্যুতের লোডশেডিং ও বিভ্রাট মারাত্নকভাবে বেড়েছে।
তীব্র গরম ও রোজার মধ্যে বিদ্যুৎ না পেয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। কোথাও ঘন্টায় ঘন্টায় বিদ্যুতের আসা-যাওয়া আবার কোথাও টানা চার-পাঁচ ঘন্টার লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এখানকার জনগণ। চাহিদানুযায়ী বিদ্যুৎ না থাকায় শিল্প উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে। ফলে একদিকে পণ্যের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে অন্যদিকে ঈদ কেন্দ্রিক বিভিন্ন পণ্যের বিপুল চাহিদার বিপরীতে জোগান দেয়াও ব্যবসায়ীদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ছে। এদিকে গরম ও বর্ষা মৌসুমের পাশাপাশি রমজানের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা আরো বেড়ে যাওয়ায় লোডশেডিংও বেড়ে গেছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, সম্প্রতি বিপুল পরিমাণ ট্রান্সফরমার একসাথে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট বেড়েছে। তাছাড়াও জ্বালানি সংকট, বিদ্যুতের উৎপাদন মূল্য সাধারণের সামর্থের মধ্যে রাখার চ্যালেঞ্জ এবং সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থায় দুর্বলতার কারণে চাহিদানুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে ব্যর্থ হচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। বিদ্যুতের বড় প্রকল্পগুলোও সময়মত বাস্তবায়িত না হওয়ায় সংকট দূর করা যাচ্ছে না।
এদিকে গত তিন-চার বছরে বিদ্যুতের দাম কয়েক গুণ বাড়লেও অন্তত ডেমরায় বিদ্যুতের সরবরাহ বেশ ভালো থাকায় জনজীবনে স্বস্তি ছিল। কিন্তু এখন সেই পুরনো দুর্ভোগ ফিরে এসেছে। ডেমরায় লোডশেডিং বহুগুণে বেড়ে গেছে। কোথাও টানা চার-পাঁচ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ থাকে না। আবার অনেক স্থানে ঘণ্টায় তিন-চার বার বিদ্যুৎ আসা-যাওয়ার ঘটনা ঘটছে।
বিদ্যুৎ বিতরণকারী সংস্থা পাওয়ার ডিস্ট্রিভিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) সূত্র জানায়, বিদ্যুতের চাহিদা ও সরবরাহের ঘাটতির ব্যবধান সরকারিভাবে উল্লিখিত তথ্যের চেয়ে বেশি। কর্তৃপক্ষ কাগজে কলমে ঘাটতি কম দেখাচ্ছে। সূত্রে আরও জানা যায়, এ অঞ্চলের অনেক এলাকায় সক্ষমতার বেশি বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এতে হঠাৎ কোনো কোনো এলাকায় বিদ্যুতের চাহিদা ধারণার চেয়ে বেড়ে যায়। এ বাড়তি চাহিদা তৈরি হওয়াকেই ওভারলোড বলা হয়। এ সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে না দিলে বিতরণ ব্যবস্থায় বিপর্যয় দেখা দেয়। পিক আওয়ারে (সর্বোচ্চ চাহিদার সময়) ওভারলোডেড ফিডারগুলোয় একাধিকবার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয় ডিপিডিসি । এতে বেড়ে যায় লোডশেডিং।
এ বিষয়ে পাওয়ার ডিস্ট্রিভিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) ডেমরা জোনের প্রকৌশলী মো. হায়দার আলী বলেন, বিতরণে রেশনিং করে লোডশেডিং কমানো ও নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। গ্যাস সংকটের কারণে প্রয়েজনীয় বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না। সঞ্চালন ব্যবস্থায় কিছু দুর্বলতাও লোডশেডিং সমস্যা তৈরি করছে। তবে এ সমস্যা থাকবে না।